শুধুমাত্র হ্যাক করার পদ্ধতি জানা থাকলে বা সিস্টেমের ত্রুটি খুঁজে বের করলেই ভালো ইথিক্যাল হ্যাকার হওয়া যায় না। একজন ভালো ইথিক্যাল হ্যাকার হওয়ার অনেক কিছুর উপর দক্ষতা থাকতে হয়। যেমনঃ
১) প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজ (Programming Language) সম্পর্কে ধরনা ডেভেলপাররা কোন সফ্টওয়্যার, মোবাইল এপ্লিকেশন, ওয়েব এপ্লিকেশন ইত্যাদি অবশ্যই কোন না কোন প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজ দিয়ে তৈরি করে। তাই সবার প্রথমে এই নলেজটি থাকা জরুরী। তবেই আপনি সিস্টেমের বিভিন্ন Bug খুঁজে বের করতে পারবেন এবং বিভিন্ন কোড পরিবর্তন করে বা কোড ডেস্ট্রয় করার মাধ্যমে সিস্টেমের অবস্থা বুঝতে পারবেন। এছাড়াও আপনি চাইলে পরবর্তীতে নিজের জন্য টুলস বানাতে পারবেন। তবে একদম শুরু থেকেই যে আপনাকে প্রোগ্রামিং জানা থাকতে হবে এমন কোন শর্ত নেই।
প্রোগ্রামিং না জেনেও বিভিন্ন টুলস এবং সফটওয়্যার ব্যবহার জেনে হ্যাকার হওয়া যায়। পরবর্তীতে আপনি প্রোগ্রামিং শিখলে ধীরে ধীরে ভালো মানের ইথিক্যাল হ্যাকার হতে পারবেন। আর ইথিক্যাল হ্যাকিং শিখার আগে থেকে যারা প্রোগ্রামিং জানে তাদের জন্য ইথিক্যাল হ্যাকিং শিখাটা আরোও অনেক সহজ হয়ে যায়।
২) ডেটাবেজ (Database) সম্পর্কে ধারণা প্রোগ্রামিং এর সাথে ডেটাবেজ যথেষ্ট ভালো ভাবেই জড়িত। ডেটাবেজ এর Query কিভাবে চালিয়ে ডেটা বের করে আনতে হয় তা অবশ্যই জানা থাকা লাগবে। তবে এটাও যে শুরু থেকেই জানা থাকা লাগবে তা কিন্তু না। আপনি ইথিক্যাল হ্যাকিং শিখার পাশাপাশি ডেটাবেজ শিখে নিতে পারেন। কিছু জনপ্রিয় ডেটাবেজ হচ্ছে MySQL, MongoDB, Oracle Database, PostgreSQL ইত্যাদি।
৩) অপারেটিং সিস্টেম (Operating System) সম্পর্কে ধারণা অপারেটিং সিস্টেম তো অনেক ধরণের আছে। যেমন Linux, Mac OS, Windows ইত্যাদি। হ্যাকারদের জন্য পারফেক্ট অপারেটিং সিস্টেম হচ্ছে Linux | Linux এর আবার অনেক ধরনের ভার্সন রয়েছে। হ্যাকারদের জন্য জনপ্রিয় Linux হচ্ছে kali, Parrot Security OS, Samurai Web Testing Framework, DEFT Linux ইত্যাদি । প্রতিটি Linux-এ শত শত কমান্ড লাইনের মাধ্যমে সিস্টেম নিয়ে কাজ করা হয়ে থাকে। তাই এই সব অপারেটিং সিস্টেম সম্পর্কে ধারণা রাখতে হবে।
৪) নেটওয়ার্কিং (Networking) অনেকেই সরাসরি হ্যাকিং শিখার জন্য মাঠে নেমে পড়েন। যেটা আমি ব্যক্তিগতভাবে ভুল সিদ্ধান্ত মনে করি। হ্যাকিং বা ইথিক্যাল হ্যাকিং যেখানেই কাজ করুন না কেন, আপনাকে Networking-এ অবশ্যই জ্ঞান অর্জন করতে হবে। তারপর ইথিক্যাল হ্যাকিং-এ পা রাখা সঠিক বলে আমি মনে করি। Networking এর সাথে Ethical Hacking এর যোগসূত্র রয়েছে। যা আপনি বিভিন্ন সার্চ ইঞ্জিনে সার্চ করলে প্রচুর ব্লগ পড়লে জানতে পারবেন। নেটওয়ার্কিং এর জন্য বিভিন্ন Linux অপারেটিং সিস্টেম যেমন Fedora, Red Hat Linux, CentOS Stream, Debian, Kali Linux ইত্যাদি খুবই জনপ্রিয়।
৫) ইন্টারনেট (Internet) ব্যবহার সম্পর্কে ধরনা থাকা ইন্টারনেট ছাড়া বর্তমান বিশ্ব অচল। এর সাথে জড়িয়ে আছে সার্চ ইঞ্জিন (Search Engine) । শুধুমাত্র ইথিক্যাল হ্যাকিং বলে কথা না, আপনি যে সেক্টরেই ক্যারিয়ার গড়ুন না কেন আপনাকে ইন্টারনেট এর ব্যবহার এবং সঠিক উপায়ে সার্চ করার পদ্ধতি জানতেই হবে। আপনার সমস্যাটি আপনি সঠিকভাবে লিখে সার্চ করতে না পারলে উক্ত সমস্যার সমাধান পাবেন না। তাই ইন্টারনেটের ব্যবহার জানতে হবে।
৬) গুরুত্বের সাথে পর্যবেক্ষণ করা ধরুন, আপনি পাইথন প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজ দিয়ে একটি এপ্লিকেশন (Application) বানাচ্ছেন। প্রোগ্রামিং লিখার সময় কোথাও একটি ডট (.) লিখতে ভুল করে কমা (,) দিয়ে ফেলেছেন। আবার হয়ত কোন একটা ক্যারেক্টার লিখেন নাই। এরকম নানা ধরণের Error এর আপনি সম্মুখীন হবেন। তখন মাথা গরম করে ছটফট করলে আপনার সমস্যা সমাধান হবে না। আপনাকে প্রতিটি লাইন, প্রতিটি কীওয়ার্ড, প্রতিটি ক্যারেক্টার সতর্কতার সাথে অর্থাৎ মনোযোগ দিয়ে পড়তে হবে। তবেই আপনি কোথায় ভুল করেছেন তা ধরতে পারবেন। তাই প্রতিটা জিনিস খুব গভীর ভাবে পর্যবেক্ষণ করতে হবে।
৭) সোশ্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং সোশ্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং হচ্ছে এক ধরণের কৌশল যা ব্যবহার করে খুব সূক্ষ্ম ফাঁদ পেতে একজন মানুষের কাছ থেকে নির্দিষ্ট তথ্য হাতিয়ে নেওয়া যায়। সোশ্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংকে অনেকে 'আর্ট অফ হিউম্যান হ্যাকিং'ও বলে থাকে। এছাড়াও গোয়েন্দা, বিভিন্ন সিক্রেট সার্ভিসের এজেন্ট ইনফরমেশন কালেক্টরদের কাছে তথ্য হাতানোর এই পদ্ধতিটা বেশ জনপ্রিয়। ভিক্টিমকে কোনো প্রকার আঘাত না করে, নিজের মূল চরিত্রটা প্রকাশ না করে, শুধু মাত্র মনস্তাত্ত্বিকভাবে তথ্য হাতানোর ব্যাপারে এই কৌশলটা অনেক শক্তিশালী এবং কার্যকর। তাই একজন এক্সপার্ট ইথিকাল হ্যাকার হতে এই ব্যাপারেও ধারণা থাকতে হবে।
কিভাবে শিখবেন এই ইথিক্যাল হ্যাকিং?
Ethical Hacking in Bangla, Cyber Security Course in Bangla এরকম অনেক ধরণের বাক্য Google, YouTube, Udemy ইত্যাদিতে সার্চ করলে Free এবং Paid কোর্স পেয়ে যাবেন।
এছাড়াও বিভিন্ন ব্লগ সাইট পেয়ে যাবেন যেখানে নিত্য নতুন Vulnerability, Security ইত্যাদি নিয়ে আলোচনা করা হয়ে থাকে।
বিভিন্ন বই PDF আকারে পেয়ে থাকবেন। অবশ্যই আপনি সেগুলো পড়ার অভ্যাস করবেন।
এতে করে আপনার Knowledge বাড়বে এবং সেগুলো এপ্লাই করার মাধ্যমে Skill বাড়বে। লার্নিং রিসোর্স দিন দিন বেড়েই চলছে। রিসোর্স নিয়ে চিন্তার কোন কারণ নেই।
রিসোর্স এর জন্য আমরা আছি। আপনি আমাদের গ্রুপের নোটিফিকেশন সেটিং থেকে সকল পোস্টের জন্য নোটিফিকেশন অন করে নেন যাতে আমাদের সকল পোস্টের নোটিফিকেশন আপনার কাছে পৌঁছায় এবং আপনি সকল রিসোর্স এবং সকল সাইবার সিকিউরিটি রিলেটেড বিষয় গুলোর সাথে যেন নিজেকে আপটুডেট রাখতে পারেন।
আপনি যখন এটি আমাদের গ্রুপ থেকে পড়ছেন তার মানে আপনি এলরেডি আমাদের একজন একটিভ মেম্বার।
আপনি যদি আমাদের অন্যন্য সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মে যুক্ত না হয়ে থাকেন তাহলে কমেন্ট বক্সে লিংক পেয়ে যাবেন এখনি জয়েন হয়ে নিন। যাতে আপনি আপটুডেট সকল রিসোর্স পেতে পারেন।
আপনার সাইবার যাত্রা সুন্দর হোক ইএচটির সাথে।
বি:দ্রঃ ইন্টারনেট থেকেও নেয়া।