ফ্রান্সের সেন্স শহরে "কলম্ব চার্টি" নামক এক মহিলা 1554 সালে একটি বিরল মেডিকেল ইস্যুর সম্মুখীন হন। চার্টি প্রসব বেদনা অনুভব করলেও কখনও প্রসব করেননি। তিন বছর তিনি শয্যাশায়ী ছিলেন এবং এই ঘটনার 28 বছর পর তার মৃত্যুর আগ পর্যন্ত অদ্ভুত রকমের পেটে ব্যথা অনুভব করতেন। ময়নাতদন্তের পর, সার্জনরা তার পেটের ভিতরে একটি ক্যালসিফাইড ভ্রূণ আবিষ্কার করেন, যা লিথোপেডিয়ন বা "স্টোন বেবি" নামে পরিচিত।
লিথোপেডিয়ন অত্যন্ত বিরল, আজ অবধি এরকম মাত্র 300টি কেস নথিভুক্ত হয়েছে। যখন ভ্রূণ জরায়ুর বাইরে বৃদ্ধি পায়, মারা যায় এবং মায়ের শরীরের মধ্যে ক্যালসিফাই করে, তখন স্টোন বেবী তৈরি হতে পারে। ক্যালসিফাই মানে ক্যালসিয়াম লবণ দ্বারা শক্ত আবরণ বা কাঠামো তৈরি হওয়া বা অস্থি/হাড় হয়ে যাওয়া। যখন ভ্রূণ এর আকার মায়ের শরীর দ্বারা পুনঃশোষিত হওয়ার জন্য অথবা প্রাকৃতিকভাবে দেহ থেকে বের হওয়ার জন্য খুব বড় হয়, তখন ভ্রূণ ধীরে ধীরে স্টোন বেবিতে পরিণত হয়।
সেন্স এর কেসটি নিয়ে বহু শতাব্দী ধরে বিতর্ক চলেছে। লিথোপেডিয়ন বিভিন্ন উপায়ে তৈরি হতে পারে, যেখানে ভ্রূণের পার্শ্ববর্তী ঝিল্লিগুলি ক্যালসিফাই করা হয়, বা ঝিল্লি এবং ভ্রূণ উভয়ই ক্যালসিফাইড হয়। এমনকি কখনও কখনও, এই ধরনের কেস গুলি গর্ভবতী ব্যক্তির জীবনের শেষ অবধি সনাক্ত করা যায় না।
গর্ভাবস্থায় ভ্রূণ জরায়ু বা ফ্যালোপিয়ান টিউবের বাইরে বৃদ্ধি পায়, এমন ঘটনা খুবই বিরল। প্রায় ১০০০০ থেকে ৩০০০০ গর্ভাবস্থার মধ্যে একটিতে ঘটে। এক্ষেত্রে ২ শতাংশেরও কম ক্ষেত্রে লিথোপেডিনস বিকশিত হয়। আধুনিক চিকিৎসার অগ্রগতি লিথোপেডিয়নগুলিকে আরও দুর্লভ করে তুলেছে, কারণ গর্ভাবস্থা এখন নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করা হয় এবং ভ্রূণ বেঁচে না থাকলে প্রায়শই তাড়াতাড়ি নষ্ট হয়ে যায়।
বিরল হওয়া সত্ত্বেও, লিথোপেডিয়ন এর ঘটনাগুলি এখনও ঘটে। কিছু বিশ্ববিদ্যালয় এবং জাদুঘর লিথোপেডিয়ন সংগ্রহে রাখে।