মানুষ প্রাণীদের কাছে বেশি ভাইরাস প্রেরণ করে

 আপনাদের মধ্যে অনেকেই হয়তোবা এ বিষয়ে অবগত আছেন যে, কো[ভি]ড-১৯ মহামারী সৃষ্টি হয়েছিল নভেল করোনা ভাইরাসের কারণে, যা বাদুড় থেকে মানুষের দেহে সংক্রমিত হয়েছিল। কো[ভি]ড-১৯ ছাড়াও আরও বেশ কিছু ভয়ংকর মহামারী সংঘটিত হয়েছিল অন্যান্য প্রাণীর দেহ থেকে মানুষের দেহে ভাইরাসের সংক্রমণের কারণে, যেমনঃ ইবোলা,ফ্লু। কিন্তু আপনারা জানেন কী অন্যান্য প্রাণীদের দেহ থেকে যে পরিমাণ ভাইরাস মানুষের দেহে সংক্রমিত হয় তার চেয়ে অনেক বেশি পরিমাণ ভাইরাস মানুষের দেহ থেকে অন্যান্য


প্রাণীর দেহে সংক্রমিত হয়ে থাকে। " ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডন(UCL) "- এর একদল বিজ্ঞানী এমনই চমকপ্রদ তথ্য দিয়েছেন।

ইউসিএলের বিজ্ঞানীরা ১২ মিলিয়ন ভাইরাল জিনোম বিশ্লেষণ করে ৩২টি ভাইরাল ফ্যামিলির ভাইরাসের হোস্ট জাম্পিং-এর ( পোষক দেহ পরিবর্তন ) গঠন পুণরায় বর্ণনা করেছেন এবং দেখেছেন কোন অংশের অধিক মিউটেশন হয়েছে। বিজ্ঞানীরা বলেছেন যে, মানুষ থেকে অন্যান্য প্রাণীর দেহে অধিক পরিমাণ ভাইরাস সংক্রমিত হয় ( একে অ্যানথ্রোপোনোসিস বলে ) এবং গবেষণাধীন অধিকাংশ ভাইরাল ফ্যামিলিই এই প্যাটার্ন অনুসরণ করে। তারা আরও জানিয়েছেন, ভাইরাস পোষক দেহ পরিবর্তন করলে জেনেটিক মিউটেশনের ফলে অধিক শক্তিশালী ও আক্রমণাত্মক হয়। ভাইরাস মানুষ থেকে অন্য কোনো প্রাণীর দেহে সংক্রমিত হলে তারা অভিযোজিত হয়ে আরও প্রবলভাবে মানুষকে পুণরায় আক্রমণ করতে পারে। এমনকি পোষক দেহ পরিবর্তনের ফলে ভাইরাসদের এতটাই মিউটেশন হয় যে, তাদের মাঝে পোষক দেহের কোষকে আক্রমণ করার জন্য ব্যবহৃত বিশেষ ধরণের প্রোটিন খুঁজে পাওয়া যায়নি।
কোনো ভাইরাস মানুষ থেকে অন্য প্রাণীর দেহে গেলে জুনোটিক রোগ (ভাইরাস মানুষ থেকে অন্য প্রাণীর দেহে গিয়ে রোগ সৃষ্টি করলে তাকে জুনোটিক রোগ বলে) তৈরির মাধ্যমে মহামারী সৃষ্টি করতে পারে যার ফলে সেই প্রজাতির সংরক্ষণ হুমকির পুখে পড়বে। এমনকি এতে খাদ্যাভাবও দেখা দিতে পারে, বিঘ্নিত হতে পারে খাদ্যের নিরাপত্তা। H5N1 বার্ড ফ্লু এমনই এক উদাহরণ। বিজ্ঞানীরা বলছেন, মানুষকে অবিরাম প্যাথোজেন ( রোগ সৃষ্টিকারী অণুজীব ) বিনিময়কারী পোষকের একটি বিশাল নেটওয়ার্কের নোড হিসেবে কল্পনা করা উচিত। প্রফেসর Francois Balloux ( UCL Genetic Institute ) বলেন, “মানুষ ও অন্যান্য প্রাণীর মাঝে ভাইরাসের সংক্রমণ পর্যবেক্ষণ করার মাধ্যমে আমরা ভাইরাল বিবর্তন সম্পর্কে জেনে ভবিষ্যৎ কোনো মহামারী প্রতিরোধের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারি”।

Post a Comment

Previous Post Next Post