ডিজাইনার, প্রোগ্রামিং ইত্যাদি সেক্টরের মতন AI দখলে নিয়ে নেবে?

 


বর্তমানের AI এর সময়ে একটা প্রশ্ন প্রায়ই উকি দেয় মাথায়, সাইবার সিকিউরিটি জবগুলো কি ভবিষ্যতের এক সময়ে গিয়ে ডিজাইনার, প্রোগ্রামিং ইত্যাদি সেক্টরের মতন AI দখলে নিয়ে নেবে?

আমার ব্যাক্তিগত মতামত হচ্ছে, সাইবার সিকিউরিটি বা এথিক্যাল হ্যাকিং এই জায়গাগুলো হচ্ছে ক্রিয়েটিভিটির জায়গা আপনার যতই মনে হোক এখানে কি আছে? শুধু টুল ব্যাবহার করো প্যাটার্ন দেখো তারপর এক্সপ্লইট করার চেষ্টা করো ব্যাস!
কিন্তু না, এখানেই শেষ না। আপনার কাছে কোনো ধরনের টুল বা টেকনিকাল গ্যাজেট নেই তারপরও আপনি শুধুই আপনার কথা আপনার মস্তিষ্ক ব্যাবহার করে যেকোনো কিছু করতে পারবেন। সাইবার সিকিউরিটি যে শুধুই নিয়ন জগতে আবদ্ধ সেটা কিন্তু নিছক এক বানোয়াট কথা। আমি বলছি না প্রোগ্রামিং বা গ্রাফিক্স ডিজাইন ইত্যাদি ক্রিয়েটিভ কাজ না; অবশ্যই সেগুলো ক্রিয়েটিভিটির আওতায় পরে। তবে Think out of box এর মত বিষয় না! AI হয়তো ট্রাবলশ্যুটিং, ডিবাগ ইত্যাদি করে অথবা তাকে শিখিয়ে দেয়া প্যাটার্ন ইত্যাদির উপর ভর করে একটা সফটওয়্যার বা ডিজাইন মানুষের তুলনায় ভালো সৃষ্টি করতে পারবে; আবার হয়তো জ্ঞানের পরিধি মানুষের তুলনায় হাজারগুণ বেশি। মানুষের মস্তিষ্ক এতটাই কমপ্লেক্স যেটা হয়তো একটা AI নিজেই ডিফাইন করতে পারবে না। হয়তো ভবিষ্যতে সাইবার সিকিউরিটি ফিল্ডের কিছু ডোমেইন AI নিজের চঙ্গুলে নিয়ে নিতে পারবে তবে সম্পূর্ণ নিতে পারবে না। কারণ পৃথিবী যতই ভবিষ্যতে যাবে ততই লুপহোল তৈরি করতে করতেই যাবে। সহজভাবে বললে যেমন ধরে নেই, HTTP v1 একসময় ব্যাপক জনপ্রিয় ছিল সেটার সিকিউরিটির খাতিরে v2 নিয়ে আসা। এখানেই কি সমস্ত দুর্বলতা শেষ? v2 হয়তো পূর্বের দুর্বলতাগুলো সরিয়েছে তবে তারই সাথে তৈরি করেছে নতুন নতুন আরো অদ্ভুত এবং কমপ্লেক্স উপায় যার দরুন হ্যাকাররা পেয়েছে আরো সহজ উপায় কাউকে হ্যাক করার।
আমাদের বাড়িতে ব্যাবহার করা ওয়াইফাই রাউটারের ব্যাপারেই একটু চিন্তা করা যাক। একটা ডিভাইসকে কোন আইপি দেয়া যায়! কিভাবে অপটিক থেকে ডাটাকে Human readable রূপ দেয়া যায় সবই নিমিষেই। এই কাজ সম্ভব হয়েছে তার ভিতরে থাকা ইঞ্জিনিয়ারিং এর অপার্থিব সুন্দর্যের কারণে। রাউটারের ভিতরে লুকিয়ে থাকা ফার্মওয়্যারের মধ্যে আগে থেকেই প্রোগ্রাম করে রাখা হয়েছে কিভাবে একটা আইপি অ্যাড্রেস এসাইন করতে হবে কিভাবে ডাটাকে নিদ্রিষ্ট সুইচে নিয়ে যেতে হবে ইত্যাদি।
এইযে সুন্দর এক আবিষ্কার; একটু চিন্তা করলেই একটা বুদ্ধি মাথায় চেপে বসবে। ফার্মওয়্যারের মধ্যে থাকা প্রোগ্রামকে সরিয়ে যদি নিজের বানানো এক প্রোগ্রাম বসিয়ে দেয়া যায় তবে খেলাটা খুব সুন্দরভাবে শেষ করা যাবে। শুধু কি রাউটার? ব্যাবসায়িক কাজে ব্যাবহার করা ক্যালকুলেটরের সাথেও কি এমন করা যাবে না? মানুষ এত এত প্রয়োজনীয় আবিষ্কার নিয়ে এলো তবে বিরাট এক লুপহোল খোলা রেখে দিয়েছে।
একটু চিন্তা করলেই এমন অহরহ উপায় পাওয়া যাবে; সাধারণ যেকোনো কিছুকে নিমিষেই ইভিল বানানোর।
.
এখন হুশিয়ারির বিষয় হচ্ছে কেউ যদি কাজটা আপনার রাউটারের জায়গায় আপনার অ্যান্ড্রয়েড ফোনের উপর করে? আপনার ফোনের অ্যান্ড্রয়েড অপারেটিং সিস্টেমের ভার্সন নিয়ে একটু কাটছাট করে ওর মধ্যে ঢুকিয়ে দেয় ট্রোজান ধাঁচের কোনো ম্যালওয়্যার। আপনি সারাজীবন ফোন রিসেট, ফ্যাক্টরি ডাটা রিসেট করেও পরিত্রাণ পাবেন না।
এইযে ইউটিউবে হরেক ভিডিও দেখি, কিভাবে অ্যান্ড্রয়েডের OS বদলে বসানো যায় নতুন এক OS; খুজে দেখবেন অধিকাংশ third party boot image বা firmware image ই দূষিত। এগুলোর বাহক হতে পারে আপনার সাধের ফোন রেপায়ারের দোকান আপনার পরিচিত ছোটভাই-বড়ভাই।
- Abstract Mind

Post a Comment

Previous Post Next Post